অভিশপ্ত
হয়তো তারা অনুন্নত
প্রাণী নয়- অভিশপ্ত মানুষ, পুরাকালের দেব-গান্ধর্ব-কিন্নর যেন কোন ক্রুদ্ধ মুনির
অভিশাপে এই হীন জীবনে নিক্ষিপ্ত। কিংবা হয়তো আমরাই শাপিত বাঁদর-বাঁদরীর দল, কোন
মায়ায় ভুলে আছি আমাদের প্রকৃত পরিচয়। তারা বোধহয় আমাদের এভাবেই ভাবে- কেই বা জানে?
কেই বা বোঝে? মানুষ ছাড়া বাকিদেরও যে মন আছে, আছে হাসি-কান্না, ভালোবাসা আছে, বোধ
আছে ভালো-মন্দের – কেই বা জানে? কিংবা হয়তো তারা মানুষ হয়েছিল আরো অনেক আগে, বিবর্তনের
ধারায় আমাদের থেকে বহু হাজার বছর এগিয়ে ছিল তারা। মানবসমাজের অগ্রগতির চূড়ায় উঠে
নিজেই নিজের ধ্বংসলীলায় মেতেছিল, বেঁচেছিল যারা গুটিকয়েক অপরিসর গুহায় কোনওমতে
লুকিয়ে তারা বুঝেছিল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড থেকে অণু-পরমাণু এত জ্ঞান নিয়ে লাভ কি যদি
বেঁচে থাকতেই না পারি নিশ্চিন্তে। কি লাভ কবিতায়-জ্যোৎস্নায়-পাখির কলকাকলি আর
ফুলের গন্ধে? জন্ম জন্মান্তর থাকতে থাকতে সেই গুহায় তারা বুঝি ভুলেছিল সোজা হয়ে
দাঁড়ানোর প্রয়োজন আর ভুলেছিল আগুন আর খুলেছিল পোষাক। ফিরে এসেছিল সেই সরল
জীবনযাপনে যেখান থেকে উঠেছিল হাজার-হাজার বছর ধরে। এখনও কি মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে
গাছের ডাল থেকে পূর্ণচন্দ্রের দিকে চেয়ে কোন প্রাজ্ঞ শাখামৃগের চোখে আসে একফোঁটা
জল- কে বা জানে? পরদিন সকাল থেকেই শুরু আহার-নিদ্রা-মৈথুন—সহজ সরল জীবনযাপন—আহার–নিদ্রা-মৈথুন।
হয়তো ওরাই ভালো আছে আর আমরা চলেছি নিয়ত সর্বনাশের পথে। তাদের চণ্ডীমণ্ডপে- রকে বসা
আড্ডায় মানুষের বালখিল্য নিয়ে হাসাহাসি হয় কি না- কে বা জানে?
কে যে অভিশপ্ত আর কে যে আশীর্বাদধন্য, কেই বা জানে? কেই বা শোনাবে হিংস্র প্রলাপের মাঝে 'সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী'?
ReplyDeleteMakes one reflect...very well written!
ReplyDelete